সুইসাইড নোট pdf download ও সুইসাইড নোট রিভিউ
উপন্যাসের নাম শুনে যে কারও চোখ কপালে উঠতে পারে, "সুইসাইড নোট" । চোখ বন্ধ রেখে বিশ্বাস করতে বাধ্য হবে যে কেউ.....কোনো ব্যাক্তির স্বেচ্ছায় মৃত্যুর আগে নিজ হাতে লিখে যাওয়া তার মৃত্যুর কারন কিংবা কতটা অসহায় আর মানসিক যন্ত্রণা তাকে মৃত্যুর মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে।
গল্পেও তাই, প্রতিনিয়ত মানসিক চাপে ধুকে ধুকে জিন্দা লাশ হয়ে বেঁচে থাকা এক অসহায় তরুণের গল্প। তার নাম শ্রাবন। রিভিউয়ে শ্রাবন নামের বানান দেখে হয়ত, যে কেউ মুচকি হেসে নিবে। নিশ্চিত হয়ে বলবে, বানান ভুল। এটা মূলত ভুল নয়, লেখক তাকে ইচ্ছেকৃতভাবে তার পূর্ণ নাম থেকে বঞ্চিত করেছে। শুধু লেখক একা নন, শ্রাবনের চারপাশের সবকিছুই তাকে বঞ্চিত করে গেছে প্রতিনিয়ত। মা-বাবার আদর স্নেহ, প্রেমিকার ভালোবাসা সব শেষে নিজে থেকে বঞ্চিত হয়েছে স্ত্রীর পবিত্র ভালোবাসা থেকে।
পারিবারিক ভাঙ্গন, মা-বাবার মাঝে দ্বন্দ্ব, বিচ্ছেদ যে কোনো সন্তানের সুস্থ মানসিক বিকাশের প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ায়। শ্রাবনও তেমন, বাবা- মায়ের বিচ্ছেদ তাকে একঝাক একাকিত্ব, অস্তিত্বহীনতা এবং হতাশার মুখে দাড় করিয়ে দেয়। তবু ভেঙে পড়েনি শ্রাবন, ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টায় লড়াকু সৈনিক হয়ে লড়ে গেছে প্রতিনিয়ত। শেষে আর দাঁড়াতে পারল কই! যে সবকিছু থেকে বঞ্চিত হওয়ার জন্যই জন্মেছে, সে কি আর শত চেষ্টায় সবকিছু ফিরে পেতে পারে?
ভার্সিটি পড়াকালীন সময়ে শ্রাবনের জীবনে এক টুকরো আলো হয়ে আসে নীলা। শ্রাবন ভেবেছিল, এই বুঝি তার সুখের দিন শুরু হলো। কিন্তু না, নীলা আসায় সে যেন আরও অন্ধকারে তলিয়ে গেল, একদম গভীরে। এ অন্ধকার তাকে আলোতে আসতে দেয়নি, ক্রমে ক্রমে বাড়তে থাকে মনের জেদ। নিজের ভিতরে জমে থাকা অপ্রকাশিত ভালোবাসা গুলো আস্তে আস্তে ঘৃণায় পরিণত হতে থাকে। নিজের মনুষ্যত্ব হারিয়ে পশুতে রুপান্তরিত হতে থাকে। এ জেদে বসে শ্রাবন ভালোবাসার কথা ভুলতে থাকে, এক সময় এটা ঘৃণায় পরিণত হয়ে প্রতিশোধ পরায়ন করে তুলে।
এর পিছনে মূল দায় ছিল, নাজিমের। যে কি না নীলার বেস্ট ফ্রেন্ড ছিল। বাস্তবে আমরা এমন ফ্রেন্ডদের গলার কাটা মনে করে থাকি। প্রেমিকার জাস্ট ফ্রেন্ড থাকতে নেই, যার থাকবে তার প্রেমিক থাকতে নেই।
নাজিম নামক গলার কাটা শ্রাবন থেকে নীলাকে আস্তে আস্তে আলাদা করতে থাকে। এ থেকে শুরু হয় সন্দেহ অবিশ্বাস। শ্রাবন সব জানা সত্যেও নীলাকে ছাড়তে পারেনি আবার আগের মতো ভালোও বাসতে পারিনি। এই চাপা যন্ত্রণা শ্রাবনকে আরও বেশি দিশেহারা করে তুলে।
এই বিকৃত মস্তিষ্কের শ্রাবনের প্রতিনিয়ত কার্যকলাপ গুলো চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দিবে, খুনী শ্রাবন নিঃসন্দেহে দোষী। তার থেকে বড় দোষী আমাদের চারপাশের মানুষ গুলো। খুনী শ্রাবন বেচে থাকলে হয়ত, খুনের দায়ে তার ফাসি হতো। তার থেকেও বড় অপরাধী যারা শ্রাবনকে খুনি হতে বাধ্য করেছে, তারা দিব্যি গায়ে বাতাস লাগিয়ে ঘুরে বেড়াত। এ গল্পেও তাই হলো, প্রকৃতি খুনি অগোচরেই রয়ে গেল। নীলাও হয়ত নিজের দোষ স্বীকার করে পার পেয়ে যাবে।
সবশেষে বলতে হয়, সুইসাইড নোট পড়াকালীন সময়ে প্রতিটা মুহূর্ত আপনাকে টান টান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করতে হবে।
ব্যাক্তিগত মতামতের ভিত্তিতে বলব, এ গল্পে সব থেকে বেশি যে বাক্যটা ঘৃণা করেছি সেটা হলোঃ আমি আসলে এতকিছু জানতাম না, সব ভুল আমারই, আমার কারণে আজ এত কিছু।
সুইসাইড নোট পিডিএফ
[ ডাউনলোড করুন ]
404 Error দেখাচ্ছে ডাউনলোড করতে গেলে
ReplyDelete