ইনফার্নো
লেখক-ড্যান ব্রাউন
অনুবাদক-মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীন
প্রকাশনী-বাতিঘর
পৃষ্ঠা সংখ্যা-৫২৬
ইনফার্নো রিভিউ :
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর সিম্বলজিস্ট রবার্ট ল্যাংডন নিজেকে আবিষ্কার করলেন ইতালির ফ্লোরেন্সের একটি হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায়।গত দুই দিন তার সাথে কি হয়েছে সেটা তার মনে নেই।আর কিভাবেই বা তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আটলান্টিকের অন্য পাড়ের দেশ ইতালিতে এসে পৌছালেন সে ব্যাপারে কোনো ধারণা নেই।অসুস্থ ল্যাংডনের মাথায় শুধু কিছু নির্দিষ্ট দৃশ্যাবলী ও শব্দ ঘুরপাক খাচ্ছে।এমন অবস্থায় ল্যাংডনের সাথে ঘটনাক্রমে জড়িয়ে পড়ে এক ডাক্তার এবং ল্যাংডন হাতে পায় একটা বায়োহ্যাজার্ড চিহ্ন যুক্ত টিউব।তার মতো একজন ইতিহাসবেত্তার সাথে মেডিকেল সায়েন্সের এই বস্তুর কি সম্পর্ক?কিভাবে বা সে ঘর থেকে হাজার মাইল দূরে এখানে আসলেন?এখানে তার আসার উদ্দেশ্য কি?কিইবা হতে যাচ্ছে সামনের সময়গুলোতে?ল্যাংডন কি বিগত দুইদিনের স্মৃতি ফিরে পাবে?
'ইনফার্নো' মূলত গড়ে উঠে উঠেছে ৩টি শহরের প্রেক্ষাপট ঘিরে-ফ্লোরেন্স,ভেনিস এবং অন্য আরেকটার নাম নাই বলি।যেহেতু ইতালি ভিত্তিক উপন্যাস সুতরাং বুঝতেই পারছেন লেখক রেনেসাঁসকালীন বিভিন্ন শিল্পী,ভাস্কর ও কবি এবং তাদের সৃষ্টিকর্ম নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করেছেন।পড়ার সময় শহরগুলো বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য নিদর্শন ও জাদুঘরের ব্যাপারে জানা যাবে।তবে সবকিছু ছাপিয়ে এমন একটা সত্যতার কথা বর্ণিত আছে যেটার ব্যাপারে আমরা জেনেও অজানা হয়ে আছি।প্রকৃতি আজ অতিরিক্ত লোকসংখ্যা ও তাদের চাহিদা মেটাতে গিয়ে কোণঠাসা।যেখানে ৫০ বছর আগেও পৃথিবীর জনসংখ্যা ছিল ৪০০ কোটি,আজ সেটা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে এবং ২০৫০ এ গিয়ে সেটা বর্তমানের দ্বিগুণ হবার সম্ভাবনা রয়েছে।এভাবে বাড়তে থাকলে সেদিন আর খুব বেশি দূরে নয় যখন মানুষ নামের এই প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাবে তাদের নিজ কৃতকর্মের জন্যই।
কাহিনির ক্ষেত্রে বলতে গেলে লেখক প্রচুর টুইস্ট ও সাসপেন্স রেখেছেন।আর কাহিনি বেশ দ্রুতগতিতে আগানোর জন্য বোরিং লাগেনি।আর অনুবাদের মান ছিলো অনেক ভালো।তাই পড়তেও অসুবিধা হয়নি।সব মিলিয়ে ড্যান ব্রাউনের অন্যতম সেরা কাজের একটি বলাই যায়।