ক্লিওপেট্রা - হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড

 


ব‌ই : ক্লিওপেট্রা

লেখক : হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড

অনুবাদ : সায়েম সোলাইমান

Download Cleopatra PDF Book

Click Here

ক্লিওপেট্রা ব‌ইয়ের রিভিউ

সেবা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হেনরি রাইডার হ্যাগারড এর আলোচিত বইয়ের অনুবাদ ক্লিওপেট্রা প্রেম, বিশ্বাসঘাতকতা আর পরিণতির এক অদ্ভুত কাহিনী।বইটার অনুবাদ করেছেন সায়েম সোলায়মান। কিছু সত্য, কিছু কল্পনা আর ফ্যান্টাসির সমন্বয়ে লেখা এই বইটা এর নাম চরিত্রের কারণেই পাঠকদের বেশী আকর্ষণ করে।

বইটি রচিত হয়েছে হার্মাচিস নামের এক পুরোহিতের কনফেশন এর উপর ভিত্তি করে, যিনি মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত হয়েছিলেন। মৃত্যুর আগে তিনি তার কাহিনি প্রাচীন প্যাপিরাস এ লিখে রেখে যান। বহুবছর পরে লন্ডনের এক হায়ারোগ্লিফিক বিশেষজ্ঞ তার বহুদিনের সাধনা শেষে এই প্যাপিরাস গুলোর পাঠোদ্ধার করেন। তার উপর রচিত হয় এই বইটা।

কাহিনি সংক্ষেপ:

প্রাচীন মিশরের অ্যাবাউদিস মন্দিরের পুরোহিত ছিলেন হার্মাসিস। যেদিন তার জন্ম হয়, ঠিক একই দিনে জন্ম নেন মিশরের রাণী ক্লিওপেট্রা।হার্মাসিসের জন্মের সময় তার মা বলেন, একদিন মিশরের রাজা হবে তার পুত্র। এই কথা তৎকালীন রাজা টলেমির কানে পৌঁছালে টলেমি নবজাতককে হত্যার আদেশ দেয়। কিন্তু হার্মাসিসের দাই মা অটোয়া নিজের নাতির জীবন দিয়ে রক্ষা করে হারমাসিসের জীবন।

হারমাসিস যুবক বয়সে জানতে পারে, তার শরীরে বইছে প্রাচীন আদিবাসীদের রক্ত, রাজরক্ত। ভিনদেশী মেসিডোনিয়ানদের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে মিশরকে। আর তাই তার শিক্ষা শুরু হয় কিভাবে ক্লিওপেট্রা কে পরাজিত করে মিশরকে নিজেদের কাছে ফিরিয়ে আনা যায় তার উপর।

কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। যে ক্লিওপেট্রাকে পরাজিত করার এত প্রস্তুতি, সেই রানীর রূপ আর প্রজ্ঞা দেখে তার প্রেমে পড়ে যায় হারমাসিস। আর সে প্রেমের পরিণতি ভালো ছিল না। যে লক্ষ্য পূরণ করতে এতগুলো বছরের কঠোর সাধনা, সে পথে বাধা হয়ে দাড়ায় প্রেম, ছলনা আর বিশ্বাসঘাতকতা। বহু কষ্টে ক্লিওপেট্রার খাস দাসী চারমিওনের সাহায্যে মিশর থেকে পালায় হারমাসিস।

আবার শুরু হয় সাধনা। এবারের লক্ষ্য আরো অটুট, যেভাবেই হোক মিশরকে রক্ষা করতে হবে। সেই উদ্দেশ্যে শুরু হয় হারমাসিসের দ্বিতীয়বারের অভিযান।

শেষ পর্যন্ত কি হয়? ক্লিওপেট্রাকে পরাজিত করা কি আদৌ সম্ভব???

প্রতিক্রিয়া:

এই বইটা আমি খুজে পাই নাটোরের পুরাতন বইয়ের দোকান থেকে। খুব বেশি বই ছিল না, তার মধ্যে এই বইটার নাম দেখেই মাত্র ২০ টাকায় বইটা কিনি। বইটার কাহিনি আসলেই সত্য কিনা আমি জানিনা, যদিও লেখকের দাবি কাহিনি একদম সত্য।

প্রাচীন পৌরাণিক গল্প, কাহিনি আর ইতিহাসের প্রতি আমার বেশ আগ্রহ। আর তাই ক্লিওপেট্রার প্রতি আগ্রহ যে অন্যরকম, সেটা বলাই বাহুল্য। বলা হয়ে থাকে, পৃথিবীর সবচেয়ে রূপবতী, প্রজ্ঞাময় আর ছলনাময়ী নারী ক্লিওপেট্রা। তার সম্পর্কে পড়াশোনা করার লোভটা তাই ছাড়তে পারছিলাম না।

বইটা প্রথমবার পড়ার পর আরো অনেক জায়গা থেকে অনেক লেখা পড়েছি। কারণ এই বইয়ের কাহিনি এতই সাবলীল ভাবে বর্ণনা করা, যে প্রাচীন মিশর নিয়ে পড়ার ইচ্ছা আরো জাগিয়ে দেয়।

১৮৮৯ সালে প্রকাশিত এই বইয়ের কাহিনি আদৌ সত্য কিনা, এই নিয়ে অনেক গবেষকের দ্বিমত আছে। অনেকের মতে এই ঘটনা সত্য, অনেকের মতে নিছকই কল্পনা।

তবে সত্য হোক বা কল্পনা, বইটার পাতায় পাতায় গল্পের ভুরিভোজ, তাই বইটা পড়ায় বেশ মজা। যারা ফ্যান্টাসি পছন্দ করেন তাদের জন্য তো কথাই নেই। তবে মনে রাখতে হবে বইটা বেশ পুরাতন। তাই এখনকার যুগের মত কথার মারপ্যাঁচ বা গল্প টেনে নেয়ার প্রবণতা নেই। তবে হ্যা, মাঝে মাঝে বইয়ের কোনো কোনো জায়গা অতিরিক্ত নাটুকে মনে হয়েছে। যেমন হারমাসিস, চারমিওন আর ক্লিওপেট্রার কাহিনি কোথাও কোথাও হিন্দি সিরিয়াল কেও হার মানিয়েছে বলে আমার মনে হয়েছে।

বইটা পড়ে সবচেয়ে বেশি যেটা জানা গেছে সেটা হলো ক্লিওপেট্রার প্রেমজীবন।রোমান শাসক মার্কাস অ্যান্টনি এর সাথে মিশরের রানীর প্রেম, পড়তে ভালই লাগছিল এটা স্বীকার না করে উপায় নেই।

বইটার অনুবাদ ভালই। খুব ভালো না আবার খুব যে খারাপ তাও না। চালিয়ে দেয়ার মত।

যারা ক্লিওপেট্রা নিয়ে আগ্রহী, তারা পড়তে পারেন। বিশ্বাস করতে না চাইলে নিতান্তই ফিকশন বলে চালিয়ে নেয়ার মত।

আমার রেটিং ৩.৫/৫

রিভিউ লিখেছেন – নাঈমা ইসলাম




Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

buttons=(Accept !) days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Accept !