আমাজনিয়া pdf | amazonia bangla pdf


 


রহস্যময় আমাজানের গহীনে নিখোঁজ হয়ে যায় ৩০ সদস্যের একটি অনুসন্ধানী টিম। সভ্য জগতে পাঠানাে তাদের শেষ বার্তা- "বেশিক্ষণ থাকতে পারছিনা...হায় ঈশ্বর! ওরা আমাদের চারপাশে ঘিরে আছে।" এরপর অনেক চেষ্টা করেও আর তাদের কোন হদিস পায়নি সভ্য জগত। 


বিবরণঃ-

কেটে গেল চারটি বছর। চার বছর পর সেই অরণ্যে খোঁজ পাওয়া গেলাে নিখোঁজ হওয়া অনুসন্ধানী টিমের সদস্য সিআই-এর এজেন্ট জেরাল্ড ক্লার্ক কে। আমাজন তার সব কেড়ে নিয়েছে এমনকি তার কথা বলার ক্ষমতাও।কিন্তু একটা অদ্ভূত ও আশ্চর্যজনক ঘটনা, জেরাল্ড ক্লার্ক যখন আমাজনে আসে তখন তার হাত ছিলাে একটি, কিন্তু এখন পােস্টমর্টেম টেবিলে দুটো হাত সহ জেরাল্ড ক্লার্ক শুয়ে আছে! রহস্যময় আমাজনে এমন কি হয়েছিল যা কেটে ফেলা হাত পুনরায় গজাতে সাহায্য করে! ক্লার্কের টিমের বাকি সদস্যরাও কি বেঁচে আছে ? এদিকে তাঁদের পিছু নিলাে এক গােপন শত্রু, ছায়ার মতন অনুসরন করে যাচ্ছে দলটিকে। কি সেই

গােপন হাত গজানাের রহস্য? নাথান কি পারবে সেই

অভিযাত্রী দলটির ভাগ্যে কি ঘটেছিলাে সেটি জানতে..? লােমহর্ষক এসব কাহিনী রয়েছে "আমাজনিয়া" বইটিতে। তাহলে দেরি না করে চলে আসুন আমাজনের এই আমাজনিয়া তে,,!!


কাহিনী সংক্ষেপঃ-

এক রাতে ব্রাজিলের আমাজনের এক ছােট গ্রামে হঠাৎ করেই উপস্থিত হল এক অসুস্থ ব্যক্তি জেরাল্ড ক্লার্ক। গ্রামের পাদ্রীর একান্ত চিকিৎসার পরেও সেই রাতেই মারা গেল ক্লার্ক। অনুসন্ধানে জানা গেল ক্লার্ক হচ্ছে স্পেশাল ফোর্স এর একজন সাবেক সৈনিক এবং সিআই-এর এজেন্ট।তার মৃত্যু সংবাদে নড়েচড়ে বসতে হলাে অনেক হােমরাচোমরা ব্যক্তিকে। প্রথম কারন, চার বছর আগে একদল অভিযাত্রী আমাজনে যাওয়ার একমাসের মাথায় গায়েব হয়ে যায়। অনেক খুঁজেও পাওয়া যায়নি তাদের কারাে হদিস। জেরাল্ড ক্লার্ক ছিল সেই অভিযাত্রী দলের সদস্য। এতাে দিন পর কোথা থেকে উদয় হলাে সে? বাকি সদস্যরা কোথায়? তারাও কী বেঁচে আছে?কী পরিনতি বরন করতে হয়েছে তাদের?? দ্বিতীয় কারণ,চার বছর আগে যখন ক্লার্ক অভিযানে যায় তখন তার হাত ছিল একটা। কিন্তু আট বছর পর ফিরে এসে তার হাত দেখা যাচ্ছে দুটো। 

জী হ্যা, একদম আসল হাত।যেন টিকটিকির লেজের মত করে গজিয়ে গেছে তার কেটে ফেলা হাত। ফিঙ্গারপ্রিন্ট ম্যাচ করে দেখা গেল এটা সত্যি তারই হাত।এটা কিভাবে সম্ভব? তাহলে কি আমাজনের গহিন অরণ্যে এমন কোন ঔষুধি গাছ আছে যা দিয়ে গজাবে মানুষের হারিয়ে যাওয়া অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ??তৃতীয় কারন, ক্লার্ক এর লাশ পােস্টমর্টেম করে দেখা গেল তার শরীরের ভেতর অচেনা সব ক্যান্সার এর জিবানু তে ভর্তি। তারচেয়েও ভয়াবহ হচ্ছে তার লাশ যেসব জায়গা দিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে সেসব জায়গা সহ পুরাে আমেরিকাতে ছড়িয়ে পড়েছে অচেনা এক ভাইরাস। আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ, বিশেষ করে শিশুরা।

দুই দিনের মধ্যেই মারা যাচ্ছে চিকিৎসা করার পড়েও। সারা দেশে ঘােষণা করা হয়েছে রেড এলার্ট। 

কোথা থেকে আসলাে এই অচেনা ভাইরাস?এই ভাইরাস এর ওষুধ কী পাওয়া যাবে আমাজনে?

এই রােগ থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় হলো মৃত্যু। আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে থাকে একের পর এক মানুষ। তাহলে কি ব্যান-আলির অভিশাপ পৃথিবীর বুকে নেমে আসছে? প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে নতুন করে অভিযান শুরু করার জন্য তৈরি করা হলাে টিম। 


তাদের খুঁজতে নতুন একটি দল আমাজনে প্রবেশ করলাে। সেই টিমে নাথান নামে একজন এথনাে বােটানিস্ট যােগ দিলেন যার বাবাও ওই হারিয়ে

যাওয়া অভিযাত্রী দলের সদস্য ছিলেন। অভিযাত্রী দলটি একের পর এক সদস্য হারাতে লাগলাে কুমির আর পিরানহার আক্রমনে, তবে এই কুমির আর পিরানহা কোন সাধারন প্রজাতির নয়।  ভয়ঙ্কর এই জঙ্গলে দুর্বলের কোন জায়গা নেই। তাদের পারি দিতে হবে বিপদে ভড়া নদী, জঙ্গল।লড়াই করতে হবে অজানা সব শত্রুর সাথে।


দলের অন্যতম সদস্য এবং গল্পের নায়ক ড. নাথান র্যান্ড,যে চার বছর আগে হাড়িয়ে যাওয়া দলের প্রধান ড. কার্ল র্যান্ড এর একমাত্র ছেলে। দলের প্রধান ফ্রাঙ্ক ওব্রেইন একজন সিআই-এর এজেন্ট,তার জমজ বােন ডা. কেলি ওব্রেইন একজন আমেরিকান ডাক্তার এবং গল্পের নায়িকাও। প্রফেসর কাউই একজন রেড ইন্ডিয়ান শামান(ওঝা) এবং নাথান এর বন্ধু। ম্যানুয়েল একজন বায়ােলজিস্ট এবং নাথান এর সবচেয়ে কাছের বন্ধু, দলে এছাড়াও আছে আরাে কিছু সিভিলিয়ান সদস্য এবং আটজন আর্মি রেঞ্জারের একটি স্বশস্ত্র দল। শুরু হলাে যাত্রা, কিন্তু যতটা সহজ মনে হচ্ছিল ততটা সহজ নয় আমাজন।প্রতি পদক্ষেপেই নতুন নতুন বাঁধা আসছে। অদ্ভুত আকৃতির পিরানহার আক্রমণে মারা যাচ্ছে সদস্যরা। জীবন হাতে নিয়ে ছুটতে হচ্ছে সবাইকে। এতদিন জানতাম পিরানহা মাছ পানিতে থাকে, কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে ডাঙ্গাতেও আক্রমণ করছে,ব্যাঙ এর মতাে লাফিয়ে লাফিয়ে। কি অদ্ভুত!!! যতােই সামনে যাচ্ছে দল ততই বাড়ছে বিপদ।


নানারকম বাধা বিপত্তি পেরিয়ে এগিয়ে যেতে থাকে নাথান র্যান্ডের দল। কিন্তু তারা বুঝতে পারে তাদের পেছনে লেগে রয়েছে এক অজানা শত্রু। একের পর এক দলের সদস্য হারিয়ে যেতে থাকে। আমাজনে অভিযান চলাকালীন সময়ে তারা একটি গ্রাম আবিষ্কার করে। কিন্তু গ্রামের সকল মানুষ ছিল মৃত। যেন তারা সবেমাত্র মারা গেছে। সেখান থেকে বেঁচে যাওয়া এক বৃদ্ধের বক্তব্য ব্যান আলির অভিশাপ তাদের গ্রামের উপর নেমে আসে। সেদিন রাতের অন্ধকারে তারা ব্যান-আলির হাত থেকে নিস্তার পাওয়ার জন্য সবাই পালাতে চেয়েছিল কিন্তু নদী থেকে জঙ্গল উঠে এসে তার ধ্বংসলীলা শুরু করে দেয়। প্রথমে বৃদ্ধের কথা অবিশ্বাস্য লাগলেও নাথান র্যান্ডের দল বুঝতে পারে রাত্রিবেলা কতটা ভয়ংকর হয়ে উঠে এই জঙ্গল। নদী এবং আকাশের নিষ্ঠুরতা কতটা ভয়ংকর এবং বিপজ্জনক পদে পদে টের পায় তারা। আমাজনের অব্যাখ্যাত রহস্য উদঘাটন করে যখন তারা এক কঠিন সত্যের মুখােমুখি হয় তখন সেখান থেকে বেঁচে ফেরাটা প্রায় অসম্ভব...


পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ-

জেমস রােলিন্স মন প্রাণ ঢেলে দিয়েছেন মনে হয়েছে এই লেখার পিছে। এটি ২০০২ এ প্রথম বার হয়। আর ২০১৪তে অনুবাদক রাকিব হাসানের সাবলীল অনুবাদ আমাদের বাঙালিদেরও পুরাে মাত্রায় বইটির আনন্দ নেওয়ার সুযােগ দিয়েছেন এই জন্য প্রথমেই তাকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। জঙ্গল এমনিতেই কিছুটা রহস্যময় জায়গা সেখানে গল্পের প্লট যদি হয় আমাজন তাহলেতাে কথাই নেই।পড়া শেষ করে ভাবছিলাম,কি নেই এই গল্পে! সুখ, দুঃখ, ঘৃনা, ভালবাসা, সাসপেন্স, থ্রিল, ভৌতিক, একশন সব কিছু দিয়ে ভরপুর। খুব মনােযােগ দিয়ে পড়তে হয়েছে কারণ ঘটনার মােড় এত বেশি যে খেই হারিয়ে ফেলার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তাই যাদের মাঝে বা শেষে পড়ার অভ্যাস আছে তাদের ফাঁকিবাজি এই বইতে চলবে না। পড়তে পড়তে ঢুকে যেতে হবে আমাজনের গহীন জঙ্গলে যেখানে জানার চাইতে অজানা বিপদের সংখ্যা বেশি। 


আমার কাছে সেরা হওয়ার কারণ:- থ্রিলার উপন্যাস বরাবরই আমার কাছে ভালাে লাগে। আর টানটান উত্তেজনার সাথে বইয়ে যদি অজানা তথ্যের ভাণ্ডার থাকে তাহলে সেই বই যে যেকোনাে বই প্রেমীর হৃদয়ে জায়গা করে নেবে সেটা তাে সহজেই অনুমেয়।বইটির মধ্যে প্রচুর পরিমাণ টুইস্ট টার্ন আছে,আছে অজানা সব রহস্য আর আমাজনের সৌন্দর্য। আছে কিছু সৎ মানুষের মনুষ্যত্ব রক্ষার লড়াই। খারাপের সাথে যুদ্ধ করে, নিজের জীবন উৎসর্গ করে মানুষ কে বাঁচানাের লড়াই ! 

 

Amazonia Pdf Download

Click Here

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

buttons=(Accept !) days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Accept !