রবীন্দ্র সাহিত্যে নতুন প্রেক্ষণ | তপন বাগচী

 



বই: রবীন্দ্র সাহিত্যে নতুন প্রেক্ষণ 

লেখক: তপন বাগচী 

প্রকাশনী: কিংবদন্তী পাবলিকেশন

শিলাইদহের রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে প্রামাণ্য সংকলন 


বাংলাদেশে রবীন্দ্রচারণভূমি শিলাইদহ, পতিসর ও শাহজাদপুর নিয়ে গবেষণাধর্মী বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ রচিত হয়েছে। তবে রবীন্দ্রস্মৃতিধন্য শিলাইদহ সম্পর্কিত গ্রন্থের সংখ্যাই বেশি। এর কারণ হিসেবে জমিদারি তদারকিতে শিলাইদহে কবির অবস্থানকে যতটা বিবেচনা করা যায়, তার চেয়ে বেশি বিবেচনা করা যায় সেখানে কবির অজস্র রচনার স্থানকে। ‘শিলাইদহে আমার রচনা অজস্ত্রভাবে পৃথিবীর আলোর কাছে প্রকাশ পেয়েছিল'—কবির এই স্বীকারোক্তিতেই এর প্রমাণ মেলে। রবীন্দ্রনাথের শিলাইদহপর্ব নিয়ে পাঠকের আগ্রহ এবং অধিক গ্রন্থ প্রকাশের তাৎপর্য হয়তো এখানেই লুকিয়ে রয়েছে।

বাংলাদেশ-ভূখণ্ডে ঠাকুর পরিবারের তিনটি জমিদারি ছিল শিলাইদহ, পতিসর ও সাজাদপুরে। তিনটি স্থানেই কবির পদচারণা ও কর্মকাণ্ড বিস্তৃত ছিল। কবির যৌবনে সৃষ্টিময় দিনগুলো কেটেছে এই জমিদারি এলাকায়। তবে সপরিবার বাসযোগ্য সুরম্য ভবন নির্মিত হয়েছিল কুষ্টিয়া জেলার শিলাইদহে। শিলাইদহের গুরুত্ব কবির জীবনে ব্যাপক বলেই প্রতীয়মান। শচীন্দ্রনাথ অধিকারীর পর্যবেক্ষণে সেই গুরুত্ব আন্তরিক উচ্চারণে চিহ্নিত- 


রবীন্দ্রনাথের বিশাল সাহিত্যসৃষ্টির সম্ভবত অর্ধাংশেরও বেশি জন্ম লাভ করে শিলাইদহের বোটে পদ্মাবক্ষে, এই কুঠিবাড়িতে, গোরাইয়ের বক্ষে ও পদ্মার চরে। তাঁর প্রথম যৌবনের ছোটগল্পের স্থান শিলাইদহে। তাঁর প্রৌঢ়কাল পর্যন্ত প্রকাশিত অধিকাংশ রচনাই শিলাইদহের প্রাকৃতিক পটভূমিকায় রচিত। তাঁর কর্মযজ্ঞের নানা কর্মপরীক্ষার উৎপত্তিস্থানও শিলাইদহে। শিলাইদহের মতো নিভৃত পল্লীনিকেতন কবি আরও পেয়েছিলেন তাঁর অপর জমিদারি সাজাদপুরে ও পতিসরে। কিন্তু রীতিমত সুরুচিপূর্ণ ঘর বেঁধে একজন অভিজাত ভদ্রগৃহস্থের বাস করবার মতো উপযুক্ত করেই শিলাইদহ কুঠিবাড়ি, বাগান, পুকুর ইত্যাদি চমৎকার প্রাচীরবেষ্টিত করে তৈরি করা হয়েছিল। এইরকম সুরম্য সুন্দর বাসভবনকবির আর কোন জমিদারিতে ছিল না। কারণ রবীন্দ্রনাথ শিলাইদ কুঠিবাড়িতেই সেকালে সপরিবার নিজ গৃহস্থালি গড়ে তুলবার আয়োজন করেছিলেন। এ বিষয়ে ‘চিঠিপত্র' প্রথম খণ্ডে কবির ইচ্ছা চমৎকারভাবে বর্ণিত হয়েছে।' (শচীন্দ্রনাথ অধিকারী, শিলাইদহ পরিচয়) 



Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

buttons=(Accept !) days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Accept !